
রোবট ডুবুরি ও তাদের কৃত্রিম বুদ্ধি: সমুদ্রের গভীরে এক নতুন অভিযান!
Massachusetts Institute of Technology (MIT) থেকে একটি দারুণ খবর! বিজ্ঞানীরা এমন এক ধরণের রোবট ডুবুরির (autonomous underwater gliders) কথা বলছেন, যারা আমাদের পৃথিবীর প্রায় ৭০% জুড়ে থাকা সমুদ্রের গভীরের রহস্য জানতে সাহায্য করবে। আর এই রোবট ডুবুরিদের আরও স্মার্ট করে তুলছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence – AI)। ভাবছেন তো, এই রোবট ডুবুরিরা আসলে কী আর তাদের সাথে AI-এর সম্পর্কই বা কী? চলুন, সহজ ভাষায় জেনে নিই!
রোবট ডুবুরি বা গ্লাইডার কী?
কল্পনা করুন, আপনার কাছে এমন একটি খেলনা আছে যা নিজে নিজেই সাঁতার কাটতে পারে, পানির নিচে ছবি তুলতে পারে, তাপমাত্রা মাপতে পারে এবং গভীর সমুদ্রের নানা তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। রোবট ডুবুরিরা অনেকটা সেরকমই, তবে অনেক বেশি শক্তিশালী এবং বুদ্ধিমান। এদেরকে “গ্লাইডার” বলার কারণ হলো, এরা ঠিক পাখির মতো ডানা ঝাপটে বা প্রপেলার ঘুরিয়ে সাঁতার কাটে না। বরং, এরা নিজের শরীরের ভেতর থাকা একটি পাম্প ব্যবহার করে পানি ভেতরে টেনে নেয় বা বাইরে বের করে দেয়। যখন এরা পানি ভেতরে টেনে নেয়, তখন এদের ওজন বেড়ে যায় এবং এরা ধীরে ধীরে নিচের দিকে নেমে যায়। আবার যখন এরা শরীরের ভেতর থেকে পানি বের করে দেয়, তখন এদের ওজন কমে যায় এবং এরা ভেসে ওঠে। ঠিক যেমন আমরা বেলুনে বাতাস ভরে দিলে সেটা যেমন ভেসে ওঠে, সেরকমই! এই ওঠানামা করার সময় এরা পানির স্রোতকে কাজে লাগিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত ভেসে যেতে পারে, কোনো জ্বালানি খরচ না করেই!
AI কীভাবে সাহায্য করছে?
এই রোবট ডুবুরিরা অনেক বুদ্ধিমান হলেও, তাদের আরও বেশি বুদ্ধিমান করে তুলছে AI। AI হলো কম্পিউটারের এক ধরণের বিশেষ ক্ষমতা, যার মাধ্যমে তারা মানুষের মতো ভাবতে, শিখতে এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
-
স্মার্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ: ধরুন, গ্লাইডারটি সমুদ্রের গভীরে যাচ্ছে ডেটা সংগ্রহ করতে। হঠাৎ করে যদি সেখানে এমন কিছু ঘটে যা আগে থেকে ঠিক করা ছিল না, যেমন – একটি বড় মাছের ঝাঁক বা পানির তাপমাত্রা হঠাৎ করে অনেক বেড়ে যাওয়া। AI গ্লাইডারকে সাহায্য করবে এই নতুন পরিস্থিতি দেখে ভয় না পেয়ে, দ্রুত এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে। এটি হয়তো অন্য পথে চলে যাবে, বা সেই বিশেষ ঘটনার ছবি তুলে রাখবে, বা কোনো বিজ্ঞানীকে সংকেত পাঠাবে।
-
স্বয়ংক্রিয়ভাবে পথ নির্ধারণ: আমরা যেমন ম্যাপ দেখে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাই, AI গ্লাইডারদেরও পথ খুঁজে বের করতে সাহায্য করে। সমুদ্রের গভীরে কোথায় কী আছে, কোথায় গেলে বেশি ভালো ডেটা পাওয়া যাবে, অথবা বিপদ এড়িয়ে কীভাবে লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে – এই সব কিছু AI ঠিক করে দেয়। ফলে, এগুলোকে সবসময় মানুষের পাশে থেকে নির্দেশ দিতে হয় না, এরা নিজেরাই নিজেদের রাস্তা খুঁজে নিতে পারে।
-
শেখা এবং উন্নতি: AI-এর সবচেয়ে দারুণ ব্যাপার হলো, এরা শিখতে পারে! যত বেশি ডেটা সংগ্রহ করবে, যত বেশি সমুদ্রের বিভিন্ন পরিস্থিতি দেখবে, তত বেশি এরা শিখবে এবং আরও ভালো কাজ করতে পারবে। ভবিষ্যতে হয়তো এরা এমন সব কাজও করতে পারবে যা আমরা এখন কল্পনাও করতে পারছি না!
এই রোবট ডুবুরিরা কী কাজ করবে?
এই রোবট ডুবুরিরা আমাদের সমুদ্রের অনেক গোপন কথা জানতে সাহায্য করবে, যেমন:
- জলবায়ু পরিবর্তন বোঝা: পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। এই রোবট ডুবুরিরা সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা, লবণাক্ততা এবং অন্যান্য ডেটা সংগ্রহ করে আমাদের জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ এবং প্রভাব বুঝতে সাহায্য করবে।
- সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা: এরা পানির নিচে থাকা বিভিন্ন ধরণের মাছ, তিমি এবং অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর গতিবিধি, তাদের বাসস্থান এবং তাদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে তথ্য দেবে। এতে আমরা এই জীবজন্তুদের রক্ষা করার উপায় খুঁজে পাব।
- খনিজ সম্পদ ও পরিবেশ সুরক্ষা: সমুদ্রের গভীরে অনেক মূল্যবান খনিজ সম্পদ লুকিয়ে আছে। এই রোবট ডুবুরিরা সেই সব সম্পদ খুঁজে বের করতে এবং সমুদ্রের পরিবেশের কোনো ক্ষতি হচ্ছে কিনা তা নজরে রাখতে সাহায্য করবে।
- নতুন পথ আবিষ্কার: সমুদ্রের অনেক জায়গাই এখনও মানুষের অজানা। এই গ্লাইডাররা সেই সব নতুন এবং অজানা জায়গায় গিয়ে আমাদের জন্য নতুন তথ্য বয়ে আনবে।
শিশুদের জন্য কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ?
এই ধরণের রোবট ডুবুরি এবং AI-এর ব্যবহার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এক অসাধারণ মেলবন্ধন। এটি আমাদের শেখায় যে, আমরা যদি বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ করি, তাহলে প্রকৃতির অনেক বড় রহস্যও ভেদ করা সম্ভব।
- কৌতূহল বৃদ্ধি: এই রোবটগুলো কীভাবে কাজ করে, বা এরা কীভাবে এত গভীরে যায় – এই সব প্রশ্ন আমাদের মনে নতুন কৌতূহল জাগাবে। আর এই কৌতূহলই হলো বিজ্ঞান শেখার প্রথম ধাপ।
- ভবিষ্যতের বিজ্ঞানী: তোমরা যারা এই লেখাটি পড়ছো, তাদের মধ্যেই হয়তো লুকিয়ে আছে ভবিষ্যতের বিজ্ঞানী, ইঞ্জিনিয়ার বা রোবট নির্মাতা। এই রোবট ডুবুরিদের কথা জেনে তোমরা হয়তো অনুপ্রাণিত হবে এবং একদিন তোমরাও এরকম দারুণ কিছু তৈরি করবে।
- প্রযুক্তি ও প্রকৃতির মেলবন্ধন: এই রোবটগুলো আমাদের শেখায় যে, প্রযুক্তি শুধু আমাদের জীবন সহজ করার জন্য নয়, এটি প্রকৃতির ভালোর জন্যও ব্যবহার করা যায়।
শেষ কথা
AI চালিত এই রোবট ডুবুরিরা সমুদ্রের গভীরে এক নতুন যুগের সূচনা করছে। এরা আমাদের পৃথিবীর প্রায় অজানা অংশকে জানার এবং বোঝার এক নতুন দরজা খুলে দিচ্ছে। আশা করি, এই রোবট ডুবুরিদের কথা জেনে তোমরাও বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী হবে এবং ভবিষ্যতে তোমরাও এমন কিছু করবে যা আমাদের পৃথিবীকে আরও সুন্দর করে তুলবে!
AI shapes autonomous underwater “gliders”
এআই সংবাদ সরবরাহ করেছে।
গুগল জেমিনির থেকে প্রতিক্রিয়া পাওয়ার জন্য নিম্নলিখিত প্রশ্নটি ব্যবহৃত হয়েছে:
2025-07-09 20:35 এ, Massachusetts Institute of Technology ‘AI shapes autonomous underwater “gliders”’ প্রকাশ করেছে। অনুগ্রহ করে সম্পর্কিত তথ্য সহ একটি বিশদ নিবন্ধ সহজ ভাষায় লিখুন, যা শিশু ও শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারবে, যাতে আরও বেশি শিশু বিজ্ঞানে আগ্রহী হয়। অনুগ্রহ করে শুধু বাংলাতে নিবন্ধটি প্রদান করুন।