
কানের ভেতরে অদ্ভুত শব্দ? টিনিটাস নামের এই রোগটি কেন এত কষ্ট দেয়, আর কী আছে এর সমাধান?
Harvard University সম্প্রতি একটি দারুণ খবর প্রকাশ করেছে, যা কানের ভেতর অস্বাভাবিক শব্দে ভোগা মানুষদের জন্য অনেক বড় আশার আলো। এই রোগটির নাম হলো ‘টিনিটাস’ (Tinnitus), যা প্রায়শই ‘অদৃশ্য’ বা ‘নীরব’ যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শিশুরা হয়তো এই নামটি তেমন শোনেনি, কিন্তু যারা এর শিকার, তাদের জীবনটা অনেক সময় খুব কঠিন হয়ে যায়। চলো, আমরা সহজ ভাষায় জেনে নিই এই টিনিটাস কী, কেন হয়, আর এই নতুন আবিষ্কারটি কীভাবে সাহায্য করতে পারে।
টিনিটাস আসলে কী?
ভাবো তো, যখন বাইরে কোনো আওয়াজ নেই, কিন্তু তোমার কানের ভেতর কেউ ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে শিস দিচ্ছে, গুনগুন করছে, ঝিঁঝি পোকার ডাকের মতো শব্দ করছে, অথবা অন্য কোনো অচেনা আওয়াজ করছে। ঠিক এটাই হলো টিনিটাস। মজার ব্যাপার হলো, এই শব্দটা আসলে বাইরে থেকে আসছে না, বরং আমাদের নিজেদের কান বা মস্তিষ্কের ভেতর থেকে আসছে।
ধরো, তোমার কান হলো একটি মাইক্রোফোন। আমাদের চারপাশের অনেক শব্দ এই মাইক্রোফোন ধরে ফেলে এবং আমাদের মস্তিষ্ককে সেই শব্দগুলো বোঝায়। কিন্তু কখনো কখনো এই মাইক্রোফোন বা তার সংকেত পাঠাবার পথে কোনো গোলমাল হয়ে গেলে, মস্তিষ্ক ভুল সংকেত পেতে শুরু করে। আর সেই ভুল সংকেতই আমরা কানের ভেতরের শব্দ হিসেবে শুনতে পাই।
কেন টিনিটাস হয়?
টিনিটাসের অনেক কারণ থাকতে পারে। ছোটদের থেকে বড়দের সবারই হতে পারে। কিছু সাধারণ কারণ হলো:
- খুব জোরে আওয়াজ শোনা: কনসার্টে, বাজির শব্দে, বা খুব জোরে গান শুনলে আমাদের কানের ভেতরের সূক্ষ্ম অংশগুলো (যেমন হেয়ার সেল) ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এটা অনেকটা মাইক্রোফোনের সূক্ষ্ম তার ছিঁড়ে যাওয়ার মতো।
- কানে ময়লা জমা: অনেক সময় কানে বেশি ময়লা জমলে সেটা স্বাভাবিক শব্দ শুনতে বাধা দেয় এবং টিনিটাসের অনুভূতি হতে পারে।
- মাথার আঘাত: মাথায় কোনো আঘাত লাগলে কানের সংকেত পাঠাবার পথে সমস্যা হতে পারে।
- বয়স: বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের শোনার ক্ষমতা কমতে থাকে, আর তার সাথে টিনিটাসও দেখা দিতে পারে।
- কিছু ওষুধ: কিছু বিশেষ ধরনের ওষুধ শরীরের উপর প্রভাব ফেলে কানের ক্ষতি করতে পারে।
- অন্যান্য রোগ: রক্তচাপ, বা কানের ভেতরের অন্য কোনো রোগের কারণেও টিনিটাস হতে পারে।
টিনিটাসের যন্ত্রণাটা কেমন?
যারা টিনিটাসে ভোগেন, তাদের জন্য এই শব্দটি সব সময় কানের ভেতর বাজতে থাকে। এটা এমন একটা যন্ত্রণা যা বাইরে থেকে কেউ দেখতে পায় না, তাই একে ‘অদৃশ্য’ যন্ত্রণা বলা হয়।
- ঘুমের সমস্যা: কানের ভেতরের এই শব্দ রাতের বেলা আরও বেশি স্পষ্ট শোনায়, ফলে অনেকেরই ঘুম হয় না।
- মনোযোগের অভাব: ক্লাসে বা কোনো কাজ করার সময় এই শব্দের কারণে ঠিকভাবে মনোযোগ দেওয়া যায় না।
- বিরক্তি ও মানসিক চাপ: সারাক্ষণ এই শব্দ শুনতে শুনতে অনেকে খুব বিরক্ত হয়ে যান এবং মানসিক চাপে ভোগেন।
- অন্যের সাথে যোগাযোগে অসুবিধা: অনেক সময় এই শব্দের কারণে অন্য কেউ কী বলছে, তা স্পষ্ট করে শোনা যায় না।
আশার আলো: Harvard University-এর নতুন গবেষণা
Harvard University-এর বিজ্ঞানীরা এই টিনিটাস রোগের কারণ নিয়ে অনেক দিন ধরে গবেষণা করছেন। তাদের নতুন আবিষ্কারটি এই সমস্যার সমাধানে দারুণভাবে সাহায্য করতে পারে।
তাদের গবেষণা বলছে, টিনিটাসের পেছনের একটি বড় কারণ হলো আমাদের মস্তিষ্কের মধ্যে কিছু ‘ভুল সংকেত’ তৈরি হওয়া। মনে করো, কানের হেয়ার সেলগুলো কোনো কারণে নষ্ট হয়ে গেছে, কিন্তু মস্তিষ্ক তখনো সেই শব্দ পাওয়ার আশা করে। তাই নষ্ট হয়ে যাওয়া অংশ থেকে আসা ভুল সংকেতকেই মস্তিষ্ক আসল শব্দ হিসেবে ধরে নেয়।
বিজ্ঞানীরা এমন কিছু পদ্ধতি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন, যা মস্তিষ্কের এই ভুল সংকেতগুলোকে শুধরে দিতে পারে। তারা হয়তো এমন ওষুধ বা থেরাপির (চিকিৎসা পদ্ধতি) খোঁজ পেয়েছেন, যা মস্তিষ্কের সেই ভুল সংযোগগুলোকে ঠিক করে দিতে পারে।
কীভাবে এই গবেষণা আমাদের সাহায্য করতে পারে?
এই গবেষণাটি যদি সফল হয়, তবে:
- কানের ভেতরের শব্দ কমে যাবে: যারা সারাক্ষণ বিরক্তিকর শব্দে ভুগছেন, তাদের সেই কষ্ট থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
- ঘুম ভালো হবে: রাতের বেলা শান্তিতে ঘুমানো সহজ হবে।
- মনোযোগ বাড়বে: ক্লাসে বা অন্য কোনো কাজে মনোযোগ দেওয়া সহজ হবে।
- জীবন সহজ হবে: টিনিটাস থেকে মুক্তি পেলে মানুষের জীবনযাত্রা অনেক সহজ ও আনন্দময় হয়ে উঠবে।
বিজ্ঞানীদের প্রতি আমাদের কী করা উচিত?
বিজ্ঞানীরা আমাদের জীবনের অনেক কঠিন সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করেন। টিনিটাসের মতো এই ‘অদৃশ্য’ যন্ত্রণার থেকেও আমাদের মুক্তি দিতে তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন।
আমরা যারা ছোট আছি, তাদের উচিত বিজ্ঞানকে ভালোবাসা, বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করা। অনেক সময় মনে হতে পারে বিজ্ঞান কঠিন, কিন্তু আসলে তা নয়। বিজ্ঞান হলো আমাদের চারপাশের সবকিছুকে বোঝার একটি সুন্দর উপায়।
যদি তোমার বা তোমার পরিচিত কারো টিনিটাস থাকে, তবে তাদের সাহস দিও, তাদের কথা শোনো। আর মনে রেখো, বিজ্ঞান সবসময় আমাদের জন্য নতুন নতুন আশার আলো নিয়ে আসে। Harvard University-এর এই গবেষণা সেই আশারই একটি নতুন উদাহরণ। আশা করা যায়, খুব শীঘ্রই টিনিটাসে আক্রান্ত লক্ষ লক্ষ মানুষ এই নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে সুস্থ জীবন ফিরে পাবে।
Hope for sufferers of ‘invisible’ tinnitus disorder
এআই সংবাদ সরবরাহ করেছে।
গুগল জেমিনির থেকে প্রতিক্রিয়া পাওয়ার জন্য নিম্নলিখিত প্রশ্নটি ব্যবহৃত হয়েছে:
2025-06-16 17:11 এ, Harvard University ‘Hope for sufferers of ‘invisible’ tinnitus disorder’ প্রকাশ করেছে। অনুগ্রহ করে সম্পর্কিত তথ্য সহ একটি বিশদ নিবন্ধ সহজ ভাষায় লিখুন, যা শিশু ও শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারবে, যাতে আরও বেশি শিশু বিজ্ঞানে আগ্রহী হয়। অনুগ্রহ করে শুধু বাংলাতে নিবন্ধটি প্রদান করুন।