
শিশুদের অকালমৃত্যু এবং প্যালিয়েটিভ কেয়ারের অসমতা: একটি নতুন গবেষণার উদ্বেগজনক চিত্র
ভূমিকা
সম্প্রতি ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যা ইংল্যান্ডের শিশুদের অকালমৃত্যুর কারণ এবং প্যালিয়েটিভ কেয়ার (palliative care) সরবরাহে বিদ্যমান বৈষম্য সম্পর্কে গভীর অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে। ন্যাশনাল চাইল্ড মর্টালিটি (NCMD) কর্তৃক পরিচালিত এই গবেষণাটি ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ইংল্যান্ডে মারা যাওয়া শিশুদের তথ্য বিশ্লেষণ করে। প্রতিবেদনটি ১১ জুলাই, ২০২৫-এ ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয় এবং এটি শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা এবং তাদের পরিবারকে সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে জরুরি হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করে।
গবেষণার মূল ফলাফল
গবেষণার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য এবং উদ্বেগজনক দিকটি হলো: ইংল্যান্ডে যে সমস্ত শিশুরা মারা গেছে তাদের অধিকাংশই জীবন-সীমাবদ্ধ (life-limiting) রোগে আক্রান্ত ছিল। এই তথ্যটি শিশুদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী এবং গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার ব্যাপকতা নির্দেশ করে, যা প্রায়শই তাদের জীবনের জন্য একটি বড় হুমকি সৃষ্টি করে। জীবন-সীমাবদ্ধ রোগ বলতে বোঝায় এমন সব শারীরিক বা মানসিক অবস্থা যা শিশুর জীবনকালকে উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেয় এবং বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়।
প্রতিবেদনটি আরও প্রকাশ করেছে যে, প্যালিয়েটিভ কেয়ারের সরবরাহে একটি সুস্পষ্ট অসমতা বিদ্যমান। এর অর্থ হলো, সব শিশু এবং তাদের পরিবার সমানভাবে প্রয়োজনীয় সহায়তা পাচ্ছে না। কিছু নির্দিষ্ট ভৌগলিক অঞ্চল, আর্থ-সামাজিক পটভূমি বা রোগের ধরনের ওপর ভিত্তি করে শিশুদের প্যালিয়েটিভ কেয়ারে প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে পার্থক্য দেখা যায়। এই অসমতা শিশুদের শেষ দিনগুলোতে বা গুরুতর অসুস্থতার সময়ে উপযুক্ত যত্ন, আরাম এবং সহায়তার অভাবকে নির্দেশ করে, যা তাদের এবং তাদের পরিবারের জন্য অত্যন্ত কঠিন একটি সময়।
প্যালিয়েটিভ কেয়ারের গুরুত্ব
প্যালিয়েটিভ কেয়ার কেবল জীবনের শেষ পর্যায়ে ব্যথামুক্ত এবং আরামদায়ক মৃত্যু নিশ্চিত করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর পরিধি আরও বিস্তৃত এবং এটি রোগের যে কোনো পর্যায়ে, এমনকি রোগ নির্ণয়ের পর থেকেই শুরু হতে পারে। এর মূল লক্ষ্য হলো শিশুর শারীরিক, মানসিক, সামাজিক এবং আধ্যাত্মিক চাহিদাগুলো পূরণ করা। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে:
- ব্যথা নিয়ন্ত্রণ এবং উপসর্গ উপশম: অসুস্থতার কারণে সৃষ্ট কষ্ট এবং অস্বস্তি দূর করা।
- মানসিক এবং আবেগিক সহায়তা: শিশু এবং তার পরিবারকে মানসিক চাপ, ভয় এবং উদ্বেগ মোকাবিলায় সাহায্য করা।
- সামাজিক সহায়তা: পরিবারকে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও ব্যবহারিক সহায়তা প্রদান, যেমন – কাউন্সেলিং, আর্থিক সহায়তা, এবং অন্যান্য রিসোর্সের সাথে সংযোগ স্থাপন।
- জীবনযাত্রার মান উন্নত করা: রোগ থাকা সত্ত্বেও শিশুর জীবনের মান যতটা সম্ভব উন্নত রাখা এবং তাকে আনন্দময় অভিজ্ঞতা প্রদান করা।
- পারিবারিক সহায়তা: পরিবারের সদস্যদের মানসিক, শারীরিক এবং আধ্যাত্মিক সুস্থতার প্রতিও মনোযোগ দেওয়া, কারণ তারা প্রায়শই কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যায়।
অসমতার প্রভাব
প্যালিয়েটিভ কেয়ার সরবরাহে যে অসমতা দেখা যায়, তার ফলে অনেক শিশুর জীবনযাত্রা, তাদের শেষ দিনগুলির অভিজ্ঞতা এবং তাদের পরিবারগুলির উপর গভীর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যে সমস্ত শিশুরা প্রয়োজনীয় প্যালিয়েটিভ কেয়ার থেকে বঞ্চিত হয়, তারা অপ্রয়োজনীয় কষ্ট ভোগ করতে পারে এবং তাদের পরিবারগুলোও সঠিক সহায়তার অভাবে একা হয়ে যেতে পারে। এই অসমতা একটি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ত্রুটি নির্দেশ করে, যেখানে সবচেয়ে দুর্বল এবং অভাবগ্রস্ত শিশুদের উপর পর্যাপ্ত মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে না।
পরবর্তী পদক্ষেপ ও সুপারিশ
ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণাটি নীতি নির্ধারকদের এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারীদের জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা বহন করে। শিশুদের জীবন-সীমাবদ্ধ রোগ এবং প্যালিয়েটিভ কেয়ারের অসমতা মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। কিছু সম্ভাব্য পদক্ষেপের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে:
- সমন্বিত স্বাস্থ্য পরিষেবা: শিশু বিশেষজ্ঞ, প্যালিয়েটিভ কেয়ার বিশেষজ্ঞ, নার্স, সমাজকর্মী এবং মনোবিজ্ঞানীদের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী দল গঠন করা, যারা শিশুর সার্বিক যত্নে নিবেদিত থাকবে।
- সচেতনতা বৃদ্ধি: প্যালিয়েটিভ কেয়ারের গুরুত্ব সম্পর্কে সাধারণ মানুষ এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
- সম্পদের সমতাভিত্তিক বন্টন: যে সমস্ত অঞ্চলে প্যালিয়েটিভ কেয়ারের সুযোগ কম, সেখানে পর্যাপ্ত সম্পদ এবং পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া।
- প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন: প্যালিয়েটিভ কেয়ারের জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা অর্জনের জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের উৎসাহিত করা।
- পরিবার-কেন্দ্রিক পরিষেবা: শিশুদের পাশাপাশি তাদের পরিবারের সকল সদস্যকে সহায়তার আওতায় আনা এবং তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
উপসংহার
ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রতিবেদনটি ইংল্যান্ডের শিশুদের জীবনে স্বাস্থ্যসেবার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল দিক উন্মোচন করেছে। জীবন-সীমাবদ্ধ রোগে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা এবং প্যালিয়েটিভ কেয়ারের অসমতা আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্বলতাগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। এই গবেষণার ফলাফলগুলো নীতি নির্ধারকদের এবং সমাজের সকল স্তরের মানুষের জন্য একটি সতর্কবার্তা। আশা করা যায়, এই প্রতিবেদনটি শিশুদের সর্বোত্তম স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে সহায়ক হবে, যাতে প্রত্যেকটি শিশু তার জীবনের শেষ দিনগুলোতেও যেন সম্মান, আরাম এবং ভালোবাসার সান্নিধ্য পায়।
এআই সংবাদ সরবরাহ করেছে।
নিচের প্রশ্নটি Google Gemini থেকে প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়েছে:
‘Research reveals majority of children who die in England have life-limiting conditions and exposes inequities in palliative care provision’ University of Bristol দ্বারা 2025-07-10 08:40 এ প্রকাশিত হয়েছে। অনুগ্রহ করে সম্পর্কিত তথ্য সহ নরম সুরে একটি বিশদ নিবন্ধ লিখুন। অনুগ্রহ করে বাংলায় শুধুমাত্র নিবন্ধ সহ উত্তর দিন।