
ডিজিটাল যুগে মানবাধিকার: জাতিসংঘের তাপিয়ারা বার্তা
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক ২০২৩ সালের ৭ই জুলাই তারিখে এক বিশেষ ভাষণে জোর দিয়েছেন যে, ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল যুগে মানবাধিকারকে অবশ্যই কেন্দ্রবিন্দুতে রাখতে হবে। তিনি বলেছেন যে, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি যদি মানব মর্যাদার সুরক্ষা নিশ্চিত না করে, তবে তা একটি অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যেতে পারে। তাঁর এই বক্তব্য ডিজিটাল জগতে মানবাধিকারের গুরুত্ব সম্পর্কে একটি নরম এবং বিশদ নিবন্ধের জন্ম দিয়েছে।
ডিজিটাল বিপ্লব এবং এর প্রভাব:
বর্তমান বিশ্ব এক অভূতপূর্ব ডিজিটাল বিপ্লবের সাক্ষী। ইন্টারনেট, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডেটা অ্যানালিটিক্স এবং অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রা, যোগাযোগ এবং তথ্য আদান-প্রদানের পদ্ধতিকে সম্পূর্ণ পরিবর্তন করে দিয়েছে। এই প্রযুক্তিগুলি একদিকে যেমন অভূতপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি করেছে, তেমনই অন্যদিকে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জও উপস্থাপন করেছে। তথ্যের সহজলভ্যতা, বৈশ্বিক সংযোগ এবং জ্ঞানের প্রসার নিঃসন্দেহে ইতিবাচক দিক, কিন্তু এই উন্নতির সাথে সাথে কিছু উদ্বেগজনক প্রবণতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
মানবাধিকারের ঝুঁকি:
ভলকার তুর্ক তাঁর ভাষণে ডিজিটাল যুগে মানবাধিকারের উপর যে সব ঝুঁকি রয়েছে, সেগুলির উপর আলোকপাত করেছেন। তিনি বলেছেন যে, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন, নজরদারি, ভুল তথ্যের বিস্তার, বৈষম্য এবং ডিজিটাল বিভাজন — এই সব কিছুই মানবাধিকারের জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করছে।
- ব্যক্তিগত গোপনীয়তা: বিপুল পরিমাণে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ এবং এর সম্ভাব্য অপব্যবহার একটি বড় উদ্বেগ। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলিতে আমরা যে তথ্য শেয়ার করি, তা কীভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, তা নিয়ে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে।
- নজরদারি: সরকার এবং কর্পোরেশনগুলি কর্তৃক ব্যাপক নজরদারি নাগরিকদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার এবং রাজনৈতিক অংশগ্রহণের সুযোগকে সীমিত করতে পারে।
- ভুল তথ্যের বিস্তার (Disinformation): ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলি ভুল তথ্য দ্রুত ছড়িয়ে দেওয়ার একটি শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এটি সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে এবং এমনকি জনস্বাস্থ্যকেও হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
- বৈষম্য ও ডিজিটাল বিভাজন: প্রযুক্তি সকলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করছে না। যারা প্রযুক্তির সুবিধা থেকে বঞ্চিত, তাদের জন্য এটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
- মত প্রকাশের স্বাধীনতা: যদিও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলি মত প্রকাশের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করেছে, কিন্তু একই সাথে এই প্ল্যাটফর্মগুলিতে ভিন্নমত দমন বা সেন্সরশিপের ঘটনাও দেখা যাচ্ছে।
মানবাধিকার-কেন্দ্রিক ডিজিটাল নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা:
জাতিসংঘের হাইকমিশনারের মূল বার্তা হলো যে, প্রযুক্তির উন্নয়ন অবশ্যই মানব অধিকারের নীতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে। তিনি বলেছেন:
- আইন ও নীতি: সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকে এমন আইন ও নীতি তৈরি করতে হবে যা ডিজিটাল জগতে মানুষের অধিকার রক্ষা করবে। এর মধ্যে ডেটা সুরক্ষা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার মতো বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।
- প্রযুক্তিগত ডিজাইন: প্রযুক্তি সংস্থাগুলিকে তাদের পণ্য ও পরিষেবাগুলি এমনভাবে ডিজাইন করতে হবে যাতে তা মানবাধিকারকে সম্মান করে। “মানবাধিকার দ্বারা চালিত ডিজাইন” (human rights by design) এই ধারণাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- শিক্ষা ও সচেতনতা: ডিজিটাল সাক্ষরতা এবং মানবাধিকার সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন, যাতে সাধারণ মানুষ তাদের অধিকার সম্পর্কে অবগত হতে পারে এবং প্রযুক্তির অপব্যবহার থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে।
- আন্তর্জাতিক সহযোগিতা: ডিজিটাল জগতের চ্যালেঞ্জগুলি আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম করে। তাই এই সমস্যাগুলি মোকাবেলায় দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতা অপরিহার্য।
ভবিষ্যতের জন্য আশা:
ভলকার তুর্ক তাঁর ভাষণে একটি আশার আলোও দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, যদি আমরা এখনই সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করি, তবে ডিজিটাল যুগ মানবাধিকারের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। প্রযুক্তি যদি মানবতাকে আরও শক্তিশালী করে, সমতা বৃদ্ধি করে এবং সবার জন্য উন্নত জীবনযাত্রা নিশ্চিত করে, তবেই তা একটি ইতিবাচক শক্তি হিসেবে প্রমাণিত হবে।
জাতিসংঘের এই আহ্বান বিশ্বব্যাপী নীতি নির্ধারক, প্রযুক্তি নির্মাতা এবং সাধারণ নাগরিকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুস্মারক। ডিজিটাল বিপ্লবের এই যুগে মানবাধিকারকে অগ্রাহ্য করা কেবল অন্যায়ই নয়, বরং মানব সমাজের ভবিষ্যৎকেও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে। তাই, আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন, যাতে প্রযুক্তি মানব মর্যাদাকে উন্নত করে, দমন না করে।
Human rights must anchor the digital age, says UN’s Türk
এআই সংবাদ সরবরাহ করেছে।
নিচের প্রশ্নটি Google Gemini থেকে প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়েছে:
‘Human rights must anchor the digital age, says UN’s Türk’ Human Rights দ্বারা 2025-07-07 12:00 এ প্রকাশিত হয়েছে। অনুগ্রহ করে সম্পর্কিত তথ্য সহ নরম সুরে একটি বিশদ নিবন্ধ লিখুন। অনুগ্রহ করে বাংলায় শুধুমাত্র নিবন্ধ সহ উত্তর দিন।