পৃথিবীর উষ্ণতা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ তৈরি: প্রচলিত বনাম উন্নত ভূ-তাপীয় শক্তি,Lawrence Berkeley National Laboratory


পৃথিবীর উষ্ণতা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ তৈরি: প্রচলিত বনাম উন্নত ভূ-তাপীয় শক্তি

Lawrence Berkeley National Laboratory একটি চমৎকার নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যার নাম “Conventional vs. Enhanced Geothermal: What’s the Difference?”। এই প্রতিবেদনটি সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করে যে কিভাবে আমরা পৃথিবীর ভেতরের উষ্ণতা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ তৈরি করতে পারি। চলুন, আমরাও একটু জেনে নিই এই দারুণ প্রযুক্তি সম্পর্কে, যা আমাদের ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ!

পৃথিবীর ভেতরের উষ্ণতা, কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

আমরা যখন পৃথিবী পৃষ্ঠে হাঁটি, তখন সাধারণত উষ্ণতা অনুভব করি। কিন্তু আমরা কি জানি যে, পৃথিবীর কেন্দ্রে তাপমাত্রা সূর্যের পৃষ্ঠের থেকেও বেশি! এই যে পৃথিবীর ভেতরের অফুরন্ত উষ্ণতা, একেই বলা হয় ভূ-তাপীয় শক্তি (Geothermal Energy)। এই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমরা বিদ্যুৎ তৈরি করতে পারি, যা পরিবেশের জন্য খুবই ভালো, কারণ এতে ধোঁয়া বা দূষণ হয় না।

প্রচলিত ভূ-তাপীয় শক্তি: প্রকৃতির উপহার

ভাবুন তো, কোথাও গরম জলের ঝর্ণা বা আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি গেলে আমরা উষ্ণতা অনুভব করি। কিছু কিছু জায়গায়, পৃথিবীর পৃষ্ঠের খুব কাছাকাছিই এই ভূ-তাপীয় শক্তি অনুভব করা যায়। প্রচলিত ভূ-তাপীয় শক্তি (Conventional Geothermal Energy) ঠিক এইভাবেই কাজ করে।

  • কিভাবে কাজ করে?

    • প্রথমে, বিজ্ঞানীরা এমন জায়গা খুঁজে বের করেন যেখানে পৃথিবীর ভেতরের উষ্ণ জল বা বাষ্প রয়েছে।
    • এরপর, মাটির গভীরে কিছু পাইপ বসানো হয়।
    • এই পাইপগুলো দিয়ে পৃথিবীর ভেতরের গরম জল বা বাষ্প উপরে নিয়ে আসা হয়।
    • এই গরম বাষ্প দিয়ে টারবাইন ঘোরানো হয়, যা বিদ্যুৎ তৈরি করে।
    • যে জল ব্যবহার করা হয়, তা আবার মাটির নিচে ফিরিয়ে দেওয়া হয়, যাতে তা আবার গরম হতে পারে।
  • সুবিধা:

    • এটি খুবই পরিবেশবান্ধব, কারণ এতে কোনো কার্বন নিঃসরণ হয় না।
    • একবার এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি হয়ে গেলে, এটি প্রায় সবসময়ই বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে, দিন বা রাত, রোদ বা বৃষ্টি নির্বিশেষে।
  • সমস্যা:

    • প্রচলিত ভূ-তাপীয় শক্তির জন্য উপযুক্ত জায়গা খুব বেশি নেই। সব জায়গায় পৃথিবীর ভেতরের উষ্ণ জল বা বাষ্প এত সহজে পাওয়া যায় না।

উন্নত ভূ-তাপীয় শক্তি: প্রকৃতির সাথে আমাদের বুদ্ধি

প্রচলিত ভূ-তাপীয় শক্তি সব জায়গায় পাওয়া যায় না, তাই বিজ্ঞানীরা এমন একটি উপায় খুঁজে বের করেছেন যাতে পৃথিবীর যেকোনো জায়গাতেই ভূ-তাপীয় শক্তি ব্যবহার করা যায়। একেই বলা হয় উন্নত ভূ-তাপীয় শক্তি (Enhanced Geothermal Systems – EGS)। এখানে আমরা প্রকৃতির উষ্ণতাকে আমাদের নিজস্ব উপায়ে কাজে লাগাই।

  • কিভাবে কাজ করে?

    • প্রচলিত ভূ-তাপীয় শক্তির মতো এখানে প্রথমেই উষ্ণ জলের খোঁজ করতে হয় না।
    • বিজ্ঞানীরা এমন জায়গা বেছে নেন যেখানে মাটির অনেক গভীরে উষ্ণ শিলা (rock) রয়েছে, কিন্তু সেখানে জল নেই।
    • এরপর, খুব সাবধানে মাটির গভীরে দুটি বা তার বেশি ছিদ্র (well) তৈরি করা হয়।
    • একটি ছিদ্র দিয়ে ঠান্ডা জল মাটির গভীরে পাঠানো হয়।
    • এই জল মাটির গভীরে থাকা উষ্ণ শিলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং গরম হয়ে যায়।
    • এরপর, অন্য ছিদ্র দিয়ে সেই গরম জল বা বাষ্পকে উপরে নিয়ে আসা হয়।
    • ঠিক প্রচলিত পদ্ধতির মতোই, এই গরম জল বা বাষ্প দিয়ে টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করা হয়।
    • এই পদ্ধতিতে, আমরা মাটির গভীরে একটি কৃত্রিম জলাধার (reservoir) তৈরি করি, যেখানে জল গরম হয়।
  • সুবিধা:

    • এই পদ্ধতিটি পৃথিবীর প্রায় যেকোনো জায়গাতেই ব্যবহার করা যেতে পারে, কারণ এখানে উষ্ণ জল খোঁজার প্রয়োজন হয় না, শুধু উষ্ণ শিলা থাকলেই হবে।
    • এটিও পরিবেশবান্ধব এবং নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে।
  • নতুনত্বের দিক:

    • EGS এখনও একটি নতুন প্রযুক্তি, এবং বিজ্ঞানীরা এটিকে আরও উন্নত করার জন্য কাজ করছেন।
    • মাটির গভীরে ছিদ্র তৈরি করা এবং জলকে দক্ষতার সাথে গরম করা, এই দুটি কাজই বেশ জটিল।

কেন এটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?

ভাবুন তো, যদি আমরা পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে এই ভূ-তাপীয় শক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ তৈরি করতে পারি, তাহলে আমাদের অনেক সুবিধা হবে।

  • পরিষ্কার বিদ্যুৎ: আমরা কয়লা বা তেলের মতো জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করা বন্ধ করতে পারব, যা আমাদের পরিবেশকে দূষিত করে।
  • বিদ্যুৎ সংকট সমাধান: সবসময় বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে, যা আমাদের জীবনকে আরও সহজ করে তুলবে।
  • নতুন চাকরি: এই প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার জন্য অনেক নতুন চাকরি তৈরি হবে।
  • ভবিষ্যতের পৃথিবীর জন্য: এটি আমাদের আগামী প্রজন্মকে একটি পরিষ্কার এবং সুস্থ পৃথিবী উপহার দেবে।

শিশু ও শিক্ষার্থীদের জন্য বার্তা:

বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত এমন সব নতুন উপায় খুঁজে বের করছেন যাতে আমরা আমাদের পৃথিবীকে আরও ভালো রাখতে পারি। ভূ-তাপীয় শক্তি তেমনই একটি দারুণ উদাহরণ। তোমরাও বড় হয়ে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে এমন নতুন সব প্রযুক্তি আবিষ্কার করতে পারো, যা আমাদের পৃথিবী এবং ভবিষ্যৎকে আরও সুন্দর করে তুলবে। তাই, আজ থেকেই বিজ্ঞান নিয়ে কৌতূহলী হও, প্রশ্ন করো এবং নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করো! কে জানে, হয়তো তুমিই হবে আগামী দিনের ভূ-তাপীয় শক্তি বিশেষজ্ঞ!


Conventional vs. Enhanced Geothermal: What’s the Difference?


এআই সংবাদ সরবরাহ করেছে।

গুগল জেমিনির থেকে প্রতিক্রিয়া পাওয়ার জন্য নিম্নলিখিত প্রশ্নটি ব্যবহৃত হয়েছে:

2025-09-04 15:00 এ, Lawrence Berkeley National Laboratory ‘Conventional vs. Enhanced Geothermal: What’s the Difference?’ প্রকাশ করেছে। অনুগ্রহ করে সম্পর্কিত তথ্য সহ একটি বিশদ নিবন্ধ সহজ ভাষায় লিখুন, যা শিশু ও শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারবে, যাতে আরও বেশি শিশু বিজ্ঞানে আগ্রহী হয়। অনুগ্রহ করে শুধু বাংলাতে নিবন্ধটি প্রদান করুন।

মন্তব্য করুন