
গন্ধের শক্তি: শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে অবহেলিত এক মানবীয় ক্ষমতা
প্রেস-সিট্রন প্রকাশকাল: ১৯ জুলাই, ২০২৫, সকাল ০৬:০২
আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মধ্যে, দর্শন ও শ্রবণশক্তি যুগ যুগ ধরে মানুষের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেছে। আমরা রঙ এবং শব্দের জগৎকে যতখানি বিশদে জানি, গন্ধের জগৎকে ততটা নয়। কিন্তু, সম্প্রতি বিজ্ঞান আমাদের শেখাচ্ছে যে, আমাদের অবহেলিত এই ঘ্রাণশক্তি আসলে এক অবিশ্বাস্য মানবীয় ক্ষমতা, যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বৈজ্ঞানিক আগ্রহের বাইরে রয়ে গেছে। প্রেস-সিট্রন-এর এই প্রতিবেদনে আমরা গন্ধের সেই বিস্ময়কর জগৎ এবং কেন এটি এত দীর্ঘকাল ধরে অবহেলিত ছিল, তা জানার চেষ্টা করব।
গন্ধের ক্ষমতা: একটি বিস্মৃত সুপারপাওয়ার
আমরা প্রায়শই গন্ধের গুরুত্বকে ছোট করে দেখি। কিন্তু, এটি আমাদের জীবনের প্রতিটি দিককে প্রভাবিত করে। খাদ্য নির্বাচনের সময়, স্বাদের পাশাপাশি গন্ধ একটি বড় ভূমিকা পালন করে। আমাদের স্মৃতি এবং আবেগের সঙ্গে গন্ধের একটি গভীর সংযোগ রয়েছে; একটি বিশেষ গন্ধ আমাদের অতীতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে, বা একটি নির্দিষ্ট অনুভূতি জাগিয়ে তুলতে পারে। এমনকি, এটি আমাদের সামাজিক মিথস্ক্রিয়া এবং সম্পর্কের ক্ষেত্রেও পরোক্ষভাবে প্রভাব ফেলে।
কিন্তু কেন এই অবহেলা?
বিংশ শতাব্দীর শুরুতে, বিজ্ঞানীরা মনে করতেন যে মানুষের ঘ্রাণশক্তি অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় অনেক দুর্বল। তাদের এই ধারণাটি মূলত মানুষের মস্তিষ্কের ঘ্রাণ-সম্পর্কিত অংশের আকার এবং তুলনামূলকভাবে কম সংখ্যক ঘ্রাণ রিসেপ্টরের (olfactory receptors) উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল। সেই সময়, মানুষের আচরণ এবং ক্ষমতা বোঝার ক্ষেত্রে দৃষ্টি এবং শ্রবণের উপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছিল, যার ফলে ঘ্রাণশক্তির গবেষণা অনেকটা পিছিয়ে পড়েছিল।
নতুন আবিষ্কারের আলোয় গন্ধ
তবে, বিগত কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানের অগ্রগতি আমাদের এই ধারণা পরিবর্তন করতে সাহায্য করেছে। বিজ্ঞানীরা এখন আবিষ্কার করেছেন যে মানুষের ঘ্রাণশক্তি কেবল খাবারের গন্ধ বা ফুলচন্দন শোঁকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর অনেক গভীর এবং সূক্ষ্ম ক্ষমতা রয়েছে:
- রোগ নির্ণয়ে সহায়ক: কিছু গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে মানুষ নির্দিষ্ট রোগের গন্ধ শনাক্ত করতে পারে, যা ভবিষ্যৎ রোগ নির্ণয়ের একটি নতুন দ্বার উন্মোচন করতে পারে।
- যোগাযোগে প্রভাব: মানুষের শরীর থেকে নিঃসৃত নির্দিষ্ট রাসায়নিক সংকেত (pheromones) মানুষের আচরণ এবং মেজাজকে প্রভাবিত করতে পারে, যদিও এই বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন।
- স্মৃতি এবং অনুভূতির যোগসূত্র: আমাদের মস্তিষ্কের লিম্বিক সিস্টেম (limbic system), যা আবেগ এবং স্মৃতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী, সরাসরি ঘ্রাণ সংবেদী স্নায়ুর (olfactory nerve) সাথে সংযুক্ত। এই কারণে, গন্ধ আমাদের স্মৃতি এবং আবেগের উপর এত শক্তিশালী প্রভাব ফেলে।
- নিরাপত্তার প্রথম ধাপ: বিপদ সংকেত, যেমন ধোঁয়া বা গ্যাস লিক, গন্ধের মাধ্যমে আমরা দ্রুততম সময়ে শনাক্ত করতে পারি, যা আমাদের জীবন বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
বর্তমানে, বিজ্ঞানীরা মানুষের ঘ্রাণশক্তির আরও গভীরে প্রবেশ করছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং উন্নত ডেটা বিশ্লেষণের মাধ্যমে, বিজ্ঞানীরা গন্ধের জটিল প্যাটার্নগুলো বোঝার চেষ্টা করছেন। এর ফলে, খাদ্য শিল্প, ওষুধ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং এমনকি মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।
মানুষের ঘ্রাণশক্তিকে একটি “সুপারপাওয়ার” হিসেবে বিবেচনা করা হয়তো কিছুটা অতিরঞ্জিত মনে হতে পারে, কিন্তু এটি আমাদের জীবনে যে গভীর প্রভাব ফেলে, তা অনস্বীকার্য। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে অবহেলিত এই ক্ষমতাটিকে এখন বিজ্ঞান নতুন করে আবিষ্কার করছে, এবং এর মাধ্যমে আমরা নিজেদের এবং আমাদের চারপাশের জগৎকে আরও ভালোভাবে বুঝতে সক্ষম হব। গন্ধের এই বিস্ময়কর যাত্রা সবেমাত্র শুরু হয়েছে।
L’odorat, ce superpouvoir humain ignoré par la science pendant un siècle
এআই সংবাদ সরবরাহ করেছে।
নিচের প্রশ্নটি Google Gemini থেকে প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়েছে:
‘L’odorat, ce superpouvoir humain ignoré par la science pendant un siècle’ Presse-Citron দ্বারা 2025-07-19 06:02 এ প্রকাশিত হয়েছে। অনুগ্রহ করে সম্পর্কিত তথ্য সহ নরম সুরে একটি বিশদ নিবন্ধ লিখুন। অনুগ্রহ করে বাংলায় শুধুমাত্র নিবন্ধ সহ উত্তর দিন।