
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় মানবাধিকার: মানব অধিকারের শক্তিশালী হাতিয়ার
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক সম্প্রতি এক ঘোষণায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানবাধিকারকে একটি “শক্তিশালী হাতিয়ার” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। জাতিসংঘের একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই তথ্য অনুসারে, জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বজুড়ে মানবতাবোধ ও অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
মানবাধিকার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের আন্তঃসম্পর্ক:
জলবায়ু পরিবর্তন কেবল পরিবেশগত সমস্যা নয়, এটি সরাসরি মানবাধিকারের উপরও প্রভাব ফেলে। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা, খরা, বন্যা, এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনযাত্রা, খাদ্য নিরাপত্তা, পানীয় জলের অধিকার, স্বাস্থ্য এবং আবাসনের অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলেছে। বিশেষ করে দরিদ্র দেশগুলো এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এই সংকটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
হাইকমিশনার তুর্কের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উদ্ভূত সংকটে যারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তাদের মানবাধিকার সুরক্ষিত রাখা অপরিহার্য। এই সংকট মোকাবিলায় যারা সবচেয়ে কম দায়ী, তাদেরই প্রায়শই সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এই অন্যায্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় মানবাধিকার-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জলবায়ু ন্যায়বিচার এবং মানব অধিকার:
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে বৈষম্য দেখা দেয়, তা দূর করতে জলবায়ু ন্যায়বিচার (Climate Justice) একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। মানবাধিকার সুরক্ষার মাধ্যমে জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এর অর্থ হলো, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ এবং এর প্রভাব মোকাবিলায় সকল মানুষের সমান অধিকার ও সুযোগ থাকা উচিত। যারা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী নয়, তাদের উপর এর বোঝা চাপানো উচিত নয়।
করণীয় কী?
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের এই ঘোষণা বিশ্বজুড়ে সরকার, সংস্থা এবং ব্যক্তি পর্যায়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় মানবাধিকারের ভূমিকা সম্পর্কে নতুন করে ভাবার অবকাশ তৈরি করেছে।
- নীতি নির্ধারণে মানবাধিকারকে প্রাধান্য: জলবায়ু পরিবর্তনের নীতি নির্ধারণের সময় মানবাধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করা উচিত। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে পরিবর্তন, কার্বন নিঃসরণ কমানো, এবং জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামো নির্মাণ – এই সব ক্ষেত্রে মানবাধিকারের গুরুত্ব বিবেচনা করা জরুরি।
- প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা: জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, যেমন – নারী, শিশু, আদিবাসী সম্প্রদায় এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। তাদের স্বাস্থ্য, খাদ্য, বাসস্থান এবং নিরাপদ জীবনযাপনের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
- আন্তর্জাতিক সহযোগিতা: জলবায়ু পরিবর্তন একটি বিশ্বব্যাপী সমস্যা। তাই এর মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং সংহতি অপরিহার্য। উন্নত দেশগুলোর উচিত উন্নয়নশীল দেশগুলোকে তাদের জলবায়ু অভিযোজন এবং প্রশমন কার্যক্রমে সহায়তা করা।
- জনসচেতনতা বৃদ্ধি: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং মানবাধিকারের সাথে এর সম্পর্ক নিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। মানুষকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলা এবং জলবায়ু অ্যাকশনে অংশ নিতে উৎসাহিত করা প্রয়োজন।
ভলকার তুর্কের এই উক্তি মনে করিয়ে দেয় যে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় শুধু প্রযুক্তি বা অর্থনৈতিক সমাধানই যথেষ্ট নয়। মানবতা ও অধিকারের বোধ থেকেই এই সংকট উত্তরণের পথ খুঁজে বের করতে হবে। যদি আমরা মানবাধিকারকে কেন্দ্র করে আমাদের প্রচেষ্টা পরিচালনা করতে পারি, তবে তা কেবল পরিবেশগত কল্যাণই আনবে না, বরং একটি ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণেও সহায়ক হবে।
Human rights can be a ‘strong lever for progress’ in climate change, says UN rights chief
এআই সংবাদ সরবরাহ করেছে।
নিচের প্রশ্নটি Google Gemini থেকে প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়েছে:
‘Human rights can be a ‘strong lever for progress’ in climate change, says UN rights chief’ Climate Change দ্বারা 2025-06-30 12:00 এ প্রকাশিত হয়েছে। অনুগ্রহ করে সম্পর্কিত তথ্য সহ নরম সুরে একটি বিশদ নিবন্ধ লিখুন। অনুগ্রহ করে বাংলায় শুধুমাত্র নিবন্ধ সহ উত্তর দিন।